যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কয়েকটি ওয়াল স্ট্রিট ব্যাংক এখন তৃতীয় প্রান্তিক রিপোর্টিং মৌসুমে প্রবেশ করেছে, আর শেয়ার বাজারে তাদের উত্থান চোখে পড়ার মতো। বিশ্লেষকরা প্রত্যাশা করছেন, এই ছয়টি বড় ব্যাংকের লাভ গত বছরের একই তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ৬% বৃদ্ধি পাবে। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “পরিস্থিতি এখন মোটামুটি শুভ,” Barclays-এর একজন বিশ্লেষক উল্লেখ করেছেন।
এই প্রান্তিকের ফলাফলের দিকটি মঙ্গলবার শুরু হবে, যখন JPMorgan Chase, Citigroup, Goldman Sachs এবং Wells Fargo তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করবে। পরের দিন Bank of America ও Morgan Stanley শুরু করবে। মূল ঋণদান, ট্রেডিং এবং ডিলমেকিং বিভাগের আয়ের বৃদ্ধিই এই রিপোর্টের মূল দিক হবে। Wells Fargo-কে ছাড় দিয়ে, অন্যান্য ব্যাংকে বিনিয়োগ ব্যাংকিং ও ট্রেডিং ধারাবাহিকভাবে সপ্তম প্রান্তিকেও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাজার এখন সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে, এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গতিশীলতার কারণে পরিস্থিতি অত্যন্ত সক্রিয়।
শেয়ার বাজারের দিক দিয়ে ওয়াল স্ট্রিটের ব্যাংকগুলো বছরের শুরু থেকে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তাদের ফি ব্যবসা বেড়েছে, ঋণের মার্জিন উন্নত হয়েছে, এবং নিয়মকানুনের কিছু শিথিলতার ফলে তারা আরও লাভবান হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, Citigroup, Goldman Sachs, JPMorgan ও Morgan Stanley-এর শেয়ার ২৩% থেকে ৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা S&P 500 সূচককে কমপক্ষে ৯ শতাংশ অতিক্রম করেছে। Wells Fargo ও Bank of America সূচকের সমান পারফর্ম করেছে।
কিছু মাস আগে, এই ব্যাংকগুলো নতুন শুল্কের কারণে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছিল, যা চুক্তি স্থগিত করেছিল এবং কর্পোরেট ঋণ কার্যক্রমকে কমিয়ে দিয়েছিল। তবে, এখন বৈশ্বিক মার্জার ও একুইজিশন ডিলের পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি, IPO, কর্পোরেট ঋণ এবং সিন্ডিকেটেড লেন্ডিংও বেড়েছে।
একটি মধ্য-সেপ্টেম্বর কনফারেন্সে ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা ব্যবসার চাহিদা, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির দৃঢ়তা এবং তাদের নিজস্ব লাভজনক অবস্থার বিষয়ে আশাবাদী সুরে কথা বলেছেন। অর্থাৎ, বিনিয়োগ ব্যাংকিং ও ট্রেডিংয়ে ব্যয় বৃদ্ধি হলেও তা খারাপ বিষয় নয়; বরং এটি কার্যক্রমের বৃদ্ধির প্রতিফলন। JPMorgan-এর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা এটিকে ভালো ব্যয় হিসেবে দেখি।”
তবে সবকিছুই উজ্জ্বল নয়। শীর্ষ ব্যাংক কর্মকর্তারা শেয়ার বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। JPMorgan ও Goldman Sachs-এর প্রধানরা আগামী দুই বছরের মধ্যে সম্ভাব্য মার্কেট সংশোধনের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। এছাড়া, বাণিজ্য, কর, অভিবাসন এবং সরকারি শাটডাউনও অর্থনৈতিক ডেটা, ঋণ কার্যক্রম ও IPO প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অটোমোবাইল শিল্পে দু’টি দেউলিয়া হওয়ার ঘটনা কিছুটা নোঙর তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ-উপজিত ঋণ ও অস্বচ্ছ মার্কেট পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে। কিছু ব্যাংকের ঋণ লাইন সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোতে রয়েছে, এবং কিছু শেয়ার ইতোমধ্যে ২০% কমেছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত ঋণ ও অনিয়মিত লেনদেন বাড়ছে, যা ওয়াশিংটনে উদ্বেগের কারণ। তবে বর্তমানে ক্রেডিট পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।
সংক্ষেপে, ওয়াল স্ট্রিটের শীর্ষ ব্যাংকগুলো লাভের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু বাজার সংশোধন, নীতি পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।



