অনেক দেশে নারীরা বিবাহের পর স্বামীর পদবি গ্রহণ করে থাকেন; এবার সেই তুলনায় ভিন্ন একটি পদক্ষেপ এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশটির সাংবিধানিক আদালত গত বৃহস্পতিবার এক সিদ্ধান্তে জানিয়েছে, পুরুষদেরও স্ত্রীর পদবি গ্রহণের সুযোগ থাকা উচিত — এমনভাবে যে আগে থাকা আইনি নিষেধাজ্ঞা আর বৈধ নয়। আদালত এই বাধাটিকে ‘ঔপনিবেশিক আমলে আমদানি’ এবং ‘লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং বলেছে যে আইনটি সরকারি কোনো স্বার্থ বা উদ্দেশ্য পূরণ করে না; ফলত ওই বিধানটি স্থগিত করা হলো।
আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে বিধানটি পিতৃতান্ত্রিক সামাজিক মানদণ্ডকে শক্তিশালী করে এবং নারীদের স্বামীর পরিচয়েই সীমাবদ্ধ করে দেখায়; এ বিষয়টিকে কেবল বৈষম্য হিসেবে নয়, বরং ‘গভীর ও সূক্ষ্ম’ সামাজিক সমস্যা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এ রায়ের ফলে পার্লামেন্টে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন এবং এর বিধিমালা সংশোধন করে রায় কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় আইন পরিবর্তনের পথে এগোনোর সুযোগ তৈরি হবে।
এই মামলাটি দুটি জুটির পক্ষ থেকে আদালতে আনা হয়েছিল। একটি মামলায় একজন পুরুষ তাঁর স্ত্রীর মৃত মা–বাবার পদবি ব্যবহার করে তাদের স্মৃতিকে সম্মান জানাতে চেয়েছেন; অন্য মামলায় একজন নারী পরিবারে একমাত্র সন্তান হিসেবে নিজের পারিবারিক পদবি বজায় রাখার আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ন্যায়বিচার ও সংবিধানিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে থেকে আদালতে এই আবেদনের বিরুদ্ধে কড়া বিরোধ পাওয়া যায়নি; উভয় মন্ত্রণালয়ই আইনের পুরনো শরীর হওয়া এবং পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে।
আগে এমন ক্ষেত্রে একজন পুরুষকে পদবি পরিবর্তনের জন্য স্বরাষ্ট্র দফতরে আবেদন করতে হতো এবং সেই আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রহণ করা হতো না; নতুন রায়ের ফলে এই প্রক্রিয়া সহজতর এবং অধিক সমতাভিত্তিক হওয়ার পথ খুলে যাবে