যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত যৌন নিপীড়নকারী জেফরি এপস্টেইনের জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত একটি বিশেষ বই ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ২০০৩ সালে এপস্টেইনের ৫০তম জন্মদিনের জন্য তৈরি এই বইয়ে বলা হচ্ছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বাক্ষরিত একটি অশালীন বার্তা রয়েছে।
এ বইটি সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে প্রকাশ করা হয়। এতে এপস্টেইনের উইল, ব্যক্তিগত ঠিকানার খাতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথি সংযুক্ত রয়েছে। ঠিকানার বইতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, রাজপরিবারের সদস্য, তারকা ও মডেলদের নাম-ঠিকানা পাওয়া গেছে।
হাউস ওভারসাইট কমিটিতে জমা দেওয়া এ বইয়ে অনেক নামকরা ব্যক্তি এপস্টেইনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ট্রাম্প ও আরেক সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরিত বার্তার কথাও উঠে এসেছে। তবে হোয়াইট হাউস বলছে, ট্রাম্প এ বার্তা লেখেননি, স্বাক্ষরও তাঁর নয়।
বিতর্কিত বার্তাটিতে এক নারীর অবয়ব আঁকা ছিল এবং শেষে লেখা ছিল— “শুভ জন্মদিন—এবং প্রতিটি দিন হোক আরেকটি চমৎকার গোপনীয়তার।” ডেমোক্র্যাট সদস্যরা ছবিটি প্রকাশ করে দাবি করেছেন, ট্রাম্প সত্য গোপন করছেন।
এই বইটির নাম “দ্য ফার্স্ট ফিফটি ইয়ারস”, যা এপস্টেইনের ব্রিটিশ সহযোগী ও প্রাক্তন প্রেমিকা গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল তৈরি করেছিলেন। তিনি ২০২১ সালে নারী পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। বইটিতে এপস্টেইনের জীবনের বিভিন্ন সময়ের ছবি, গানের কথা, ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ, ব্যক্তিগত গল্প ও অশ্লীল স্কেচও রয়েছে।
বিতর্কিত বার্তা প্রকাশের পর হোয়াইট হাউস একে ভুয়া দাবি করেছে। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বলছেন, প্রমাণ এখন সামনে এসেছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন— “এপস্টেইনের জন্মদিনে ট্রাম্পের বার্তা; যেটি নেই বলেই দাবি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট।”
এর আগে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এই খবর প্রথম প্রকাশিত হয়, যা ট্রাম্প তখন অস্বীকার করেছিলেন। এমনকি তিনি সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম ও এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের মামলা দায়ের করেন।
হাউস ওভারসাইট কমিটি জানায়, এ বইয়ের সঙ্গে এপস্টেইনের ২০০৭ সালের এক চুক্তি ও প্রায় ৩০ বছরের ব্যক্তিগত ঠিকানার নথিও প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প ও এপস্টেইন বহু বছর বন্ধু ছিলেন। তবে ২০০০-এর দশকের শুরুতে তাঁদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এপস্টেইন প্রথমবার ২০০৬ সালে ফ্লোরিডায় যৌন অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং ২০১৯ সালে বিচারাধীন অবস্থায় জেলেই মারা যান।