Thursday, November 20, 2025
spot_img
Homeকমিউনিটি সংবাদইসরায়েল-হামাস চুক্তির “প্রথম ধাপ”: গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দী মুক্তির পথে নতুন আশা

ইসরায়েল-হামাস চুক্তির “প্রথম ধাপ”: গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দী মুক্তির পথে নতুন আশা

গত বৃহস্পতিবার কায়রোর আলোচিত আলোচনায় ইসরায়েল ও হামাস মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘ দুই বছরের যুদ্ধ শেষের লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির “প্রথম ধাপ” স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট চুক্তির ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, এই ধাপে সমস্ত ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল তার সেনাদের নির্ধারিত সীমারেখায় প্রত্যাহার করবে।

চুক্তি কার্যকর হওয়ার জন্য ইসরায়েল সরকার বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট দেবে এবং অনুমোদনের পরই শর্ম-এল-শেখে চুক্তিতে স্বাক্ষর করা হবে। তবে চুক্তি নিয়ে দেশটির ভিতরে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশের ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে তিনি চুক্তির পক্ষে ভোট দেবেন না। তার মতে, বন্দীদের মুক্তি নতুন প্রজন্মের সন্ত্রাসী নেতাদের জন্ম দিতে পারে, যা ভবিষ্যতে ইসরায়েলের জন্য বড় হুমকি। তিনি এবং অন্যান্য নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের সদস্যরা বিশ্বাস করেন যে, বন্দী মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধ থামানো এক ভুল বার্তা প্রদান করবে।

এর বিপরীতে, মিশরের রাষ্ট্রপ্রধান বলেছেন, চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতার নতুন দোরগোড়া খুলবে। শর্ম-এল-শেখে আলোচনার মাধ্যমে ইসরায়েল-হামাস দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা, দুই বছরের যুদ্ধ শেষ এবং হাজার হাজার সাধারণ মানুষের কষ্ট কমানোর লক্ষ্যে এই চুক্তি সম্ভব হয়েছে। রাষ্ট্রপ্রধান জানান, এটি কেবল যুদ্ধের অধ্যায় শেষ করবে না, বরং অঞ্চলবাসীর জন্য ন্যায় ও স্থিতিশীলতায় ভবিষ্যতের আশা জাগাবে।

প্রত্যাশিত সময়সূচি অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি সেনারা গাজা শহরসহ নির্ধারিত ‘হলুদ’ সীমারেখায় আংশিক প্রত্যাহার শুরু করবে। এই প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার পর হামাসকে বাকি বন্দী মুক্তির জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে। বন্দীদের মধ্যে বেঁচে থাকা প্রায় ২০ জন মুক্তি পাবে, তবে পাল্টা ইসরায়েলি বন্দী মুক্তির সময়সূচি এখনও নিশ্চিত হয়নি।

গাজায় এই যুদ্ধবিরতির সংবাদে অগণিত মানুষ আনন্দ ও স্বস্তি অনুভব করছে। ৭৩৪ দিন ধরে চলা যুদ্ধের ফলে সাধারণ মানুষ অসংখ্য ক্ষতি, বাস্তুচ্যুতি ও দুঃখ ভোগ করেছে। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে প্রিয়জনদের মুক্তির জন্য আকুতি জানিয়ে আসছিল। তবে চুক্তি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা স্বতঃস্ফূর্তভাবে উদযাপন করতে শুরু করেছে।

ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। হোস্টেজ স্কোয়ারে রাতারাতি উদযাপন শুরু হয়। বহু মানুষ ইসরায়েলি ও মার্কিন পতাকা হাতে ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ট্রাম্পের মধ্যস্থতার কারণেই যুদ্ধ শেষ হয়েছে এবং বন্দীদের মুক্তি সম্ভব হয়েছে।

চুক্তির প্রথম ধাপ বাস্তবায়িত হলে, বন্দীদের মুক্তি এবং সেনাদের প্রত্যাহার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথও সুগম হবে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা এবং অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীরা নিশ্চিত করেছেন যে, এই ধাপ যুদ্ধ শেষ, ইসরায়েলি ও প্যালেস্টাইনি বন্দীদের মুক্তি এবং মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করবে।

ফিফা এবং আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এমন ধরণের মধ্যস্থতা না হলে দুই দেশের মধ্যে নতুন সংঘর্ষের সম্ভাবনা থাকে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকেই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments