বার্সেলোনা ক্লাব ইয়ামালকে এই মাসে স্পেন জাতীয় দলে খেলতে ছাড়ছে না। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে স্পেনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে জর্জিয়া ও বুলগেরিয়ার সঙ্গে ম্যাচ থাকলেও কাতালান ক্লাবটি কিশোর তারকাকে ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ইয়ামালের কুঁচকির চোটের কারণে বার্সেলোনা তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সেপ্টেম্বরে স্পেন জাতীয় দলে খেলানোর সময় ব্যথানাশক দিয়ে ইয়ামালকে মাঠে নামানো হয়েছিল। এই কারণে তার চোট আরও গুরুতর হয়েছে এবং পরবর্তী লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগের কয়েকটি ম্যাচে তিনি খেলতে পারেননি। রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে লা লিগায় ফিরে আসার পর কোচ ইয়ামালকে পিএসজি ও সেভিয়ার বিপক্ষে খেলার পরিকল্পনা করেছেন। এরপরই তাকে জাতীয় দলে খেলার জন্য আনফিট ঘোষণা করবে বার্সেলোনা।
গত কয়েক মাসে ইয়ামালকে স্পেনের হয়ে খেলাতে গিয়ে তার কুঁচকির পুরোনো সমস্যাটি আরও বেড়ে গেছে। ফলে বার্সেলোনা ভ্যালেন্সিয়া, হেতাফে, রিয়াল ওভিয়েডো এবং নিউক্যাসল ম্যাচগুলোতে তাকে মাঠে নামাতে পারেনি। কোচ হানসি ফ্লিকও জানিয়েছিলেন, ‘লামিনে ইয়ামাল খেলতে পারবে না। চোট নিয়ে জাতীয় দলের ক্যাম্পে গিয়েছিল, কিন্তু অনুশীলন করতে পারেনি। তবু তাকে ব্যথানাশক দিয়ে খেলানো হয়েছে। এটা কোনোভাবেই খেলোয়াড়ের প্রতি যত্ন নেওয়া নয়।’
ইয়ামালের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে বার্সেলোনা ও স্পেনের মধ্যে মতবিরোধ তীব্র হচ্ছে। এই বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক ফুটবল সংগঠন ফিফপ্রো। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাত্র ১৮ বছর বয়সে ইয়ামাল ১৩০টি ম্যাচ খেলেছেন, যা উদ্বেগজনক। তুলনামূলকভাবে, বার্সেলোনা কিংবদন্তি আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা তখন ওই বয়সে মাত্র ৪০টি ম্যাচ খেলেছিলেন।
ফিফপ্রোর হাই-পারফরম্যান্স অ্যাডভাইজরি নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘অল্প বয়সে অতিরিক্ত চাপ ফুটবলারদের বড় ধরনের চোটের ঝুঁকিতে ফেলে। ২৪-২৫ বছর বয়স পর্যন্ত খেলোয়াড়দের উপর অতিরিক্ত চাপ দেওয়া মানে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি করা।’
ফিফপ্রোর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘এই বয়সে হাড়ের বৃদ্ধি, টেন্ডন ও লিগামেন্ট খুবই নাজুক। অতিরিক্ত জোরে দৌড়ানো বা কম বিশ্রামে খেলা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করতে পারে। মানসিক চাপও এসময় প্রভাব ফেলে, যা উপেক্ষা করা উচিত নয়।’
বার্সেলোনা ক্লাব এবং স্পেন জাতীয় দল এখন সতর্কতার সঙ্গে ইয়ামালের খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কাতালান ক্লাব তার স্বার্থে তাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চাচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে বড় ধরনের চোট এড়ানো যায়।