কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে অগ্রগতি এনে দেওয়া সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা এনভিডিয়া বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে, তারা ইন্টেলের শেয়ারে ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। একই সঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে পার্সোনাল কম্পিউটার ও ডেটা সেন্টারের জন্য নতুন চিপ তৈরি করার কাজ শুরু করবে।
ঘোষণার পর প্রি-মার্কেট ট্রেডিংয়ে ইন্টেলের শেয়ারের দাম ৩০ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। অন্যদিকে এনভিডিয়ার শেয়ার প্রায় ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
এই পদক্ষেপ আসে এমন সময়ে যখন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইন্টেলের প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার কিনেছে, যার মূল্য প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি জাপানের সফটব্যাংকও প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি ইন্টেলের জন্য এক বড় সুযোগ এনে দিয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানটিকে আবারও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দৌড়ে ফিরিয়ে আনবে। সাম্প্রতিক সরকারি বিনিয়োগ ও এনভিডিয়ার সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির পর নতুন আশার আলো দেখছে বিনিয়োগকারীরা।
এই ঘোষণার ফলে যুক্তরাষ্ট্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দৌড়ে চীনের তুলনায় আরও এগিয়ে গেল বলে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। একসময় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পিছিয়ে পড়া ইন্টেল এখন পরিবর্তনের অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।
ইন্টেল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বারবার নেতৃত্ব পরিবর্তন ও কৌশলগত সিদ্ধান্তের অস্থিরতায় প্রতিযোগীদের পেছনে পড়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে মোবাইল ফোন চিপ ও এআই খাতে এনভিডিয়া, এএমডি এবং ব্রডকমের সঙ্গে পাল্লা দিতে ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে, ইন্টেলের বর্তমান সিইওকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তবে সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। এর অল্প কিছুদিন পরই বাইডেন আমলের CHIPS Act এর অর্থায়ন থেকে ইন্টেলে বড় বিনিয়োগ আসে।
অন্যদিকে, এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফরের সময়ও তিনি রাষ্ট্রীয় ডিনারে অংশ নেন এবং একইসঙ্গে দেশটিতে এআই অবকাঠামোয় প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের ঘোষণা দেন।
সব মিলিয়ে, নতুন এই অংশীদারিত্ব শুধু ইন্টেলকেই নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রকেও বৈশ্বিক এআই প্রতিযোগিতায় শক্ত অবস্থান এনে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।