বিশ্বে এমন কিছু আবাসন রয়েছে, যেগুলো দেখে স্বাভাবিক জীবনের সঙ্গে পুরোপুরি মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। কেউ বাড়ি তৈরি করেছে ছাদের ওপর, কেউ আবার ভুতুড়ে হিসেবে পরিচিত। এমন তিনটি অদ্ভুত আবাসনের খবর সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল হয়েছে।
ছাদের ওপর নির্মিত বাড়ির উদাহরণ চীনে। ২০০৯ সালে হুনান প্রদেশের হেঙ্গইয়াং শহরে একটি শপিং মলের ছাদে ২৫টি বিলাসবহুল ভিলা তৈরি হয়। প্রতিটি ভিলার আয়তন বড় নয়, তবে এতে গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা ছিল। শুরুর দিকে সরকারের অনুমতি না থাকায় এগুলো ভেঙে ফেলার কথা ভাবা হয়। পরে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেওয়া হয়, যেখানে বলা হয় বিক্রি না করলে বাড়িগুলো থাকতে পারে। এই ভিলাগুলো তখন থেকে অভিবাসী শ্রমিক ও নির্মাণ কর্মীদের অস্থায়ী বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। চীনের অন্যান্য শহরেও ছাদের ওপর এ ধরনের নির্মাণের নজির পাওয়া যায়, যা মূলত জমির সর্বাধিক ব্যবহার ও নতুনত্ব উপভোগ করার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়।
অন্যদিকে, ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ভুতুড়ে বাড়ি হিসেবে পরিচিত ‘র্যাম ইন’। গ্লস্টারশায়ারের ওটন-আন্ডার-এজে অবস্থিত এই বাড়িটির বয়স প্রায় ৮৭৫ বছর। ১১৪৫ খ্রিষ্টাব্দে নির্মাণ করা এই স্থাপনা শুরুতে গির্জা নির্মাণে যুক্ত শ্রমিকদের জন্য তৈরি হয়। পরে এটি পাদরির বাসস্থান ও সরাইখানার কাজেও ব্যবহৃত হয়। বাড়িটি একটি প্রাচীন গোরস্থানের ওপর তৈরি হওয়ায় কথিত আছে, এখানে অদৃশ্য শক্তির উপস্থিতি অনুভূত হয়েছে। অনেকেই শিশুর হাসি-কান্নার আওয়াজ, ভুতুড়ে ছায়া এবং অশরীরী উপস্থিতির তত্ত্ব লক্ষ্য করেছেন। ১৯৪৮ সালে একজন ব্যক্তি এই বাড়িটি কিনে সেখানে অতিথিশালা চালু করেন, এবং বর্তমানে এটি তার কন্যা পরিচালনা করছেন।
তৃতীয় উদাহরণ হলো লেগো দিয়ে তৈরি বাড়ি। যুক্তরাজ্যের সারে অঞ্চলের এক বাসিন্দা এই বাড়ি তৈরি করেছিলেন ৩৩ লাখের বেশি রঙিন লেগো ব্রিক ব্যবহার করে। ২০০৯ সালে প্রায় ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর সাহায্যে খেলার ছলেই তৈরি করা হয়েছিল এই বাড়ি। বাড়িটিতে টয়লেট, শাওয়ার, সিঁড়ি এবং বিছানা—সবই লেগো দিয়ে তৈরি। তবে স্থানীয় আঙুরখামারের জমিতে থাকায় বাড়িটিকে অন্যত্র সরানোর নির্দেশ আসে। প্রায় ৫০ হাজার ডলার খরচের কারণে শেষপর্যন্ত বাড়িটি ধ্বংস করতে হয়।
এই সব উদাহরণ দেখায়, মানুষ কখনো কখনো স্বাভাবিক আবাসনের সীমানা ছাড়িয়ে এমন অদ্ভুত এবং সৃজনশীল উপায়ে জীবনযাপন করার চেষ্টা করে।