রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় নিখোঁজের একদিন পর উদ্ধার হলো এক কৃষক সংগঠনের নেতার লাশ। শুক্রবার রাতে উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের একটি কলাবাগান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ব্যক্তি টেপামধুপুর ইউনিয়নের একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে কৃষক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি চরগুনাই গ্রামের একজন বাসিন্দা।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে এশার নামাজ আদায় করতে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। কিন্তু এরপর আর ঘরে ফেরেননি। রাত গভীর হলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরদিন সকালে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পাওয়া যায় স্থানীয় এক বাড়ির পাশের ধানখেত থেকে। এতে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে খোঁজ করতে গিয়ে পাশের একটি কলাবাগানে নতুন করে আলগা মাটি দিয়ে চাপা দেওয়া একটি জায়গায় কলাগাছ রোপণ করা দেখা যায়। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে এলাকাবাসী সেখানে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেন। তখন কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় নিহতের লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা, পিঠ ও গলার বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, পূর্বের বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। নিহতের মা থানায় দায়ের করা মামলায় সাতজনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করেছেন, পাশাপাশি অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করেছেন।
পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারে উল্লেখিত দ্বিতীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি এলাকায় পূর্ববর্তী দ্বন্দ্বেরই পরিণতি। স্থানীয়রা হত্যাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডের পেছনের মূল কারণ উদঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।