Sunday, October 5, 2025
spot_img
Homeইমিগ্রেশন তথ্যআমেরিকা থেকে ১২০ ইরানি নাগরিক ফেরত পাঠানো হচ্ছে

আমেরিকা থেকে ১২০ ইরানি নাগরিক ফেরত পাঠানো হচ্ছে

আমেরিকা থেকে ১২০ জন ইরানি নাগরিককে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে তেহরান। বিষয়টি উভয় দেশের মধ্যে হওয়া সাম্প্রতিক এক সমঝোতার অংশ হিসেবে কার্যকর হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ব্যক্তিদের আগামী এক থেকে দুই দিনের মধ্যে ইরানে ফেরত পাঠানো হবে।

তথ্য অনুযায়ী, যাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে তাদের অধিকাংশই অবৈধভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করেছিলেন, বিশেষ করে মেক্সিকো সীমান্ত হয়ে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমেরিকায় প্রবেশ করা ইরানি নাগরিকের সংখ্যা বেড়ে গেছে। অনেকে জানিয়েছেন, তারা দেশে নিপীড়নের আশঙ্কা থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

আমেরিকান প্রশাসনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার হলো দেশে অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের ফিরিয়ে দেওয়া এবং এর মাধ্যমে ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ বহিষ্কার অভিযান পরিচালনা করা। প্রশাসনের ভাষ্যমতে, এ উদ্যোগে প্রয়োজনীয় সব আইনি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ ব্যবহার করা হবে।

অন্যদিকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বহিষ্কৃতদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি পত্র রাখতেন। তিনি আরও জানান, মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাদের দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য সম্মতি নিয়েছে। এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অভিবাসীদের অধিকার ও নাগরিকত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার জন্য আমেরিকান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বহিষ্কৃতদের বহনকারী ফ্লাইট কাতার হয়ে ইরানে পৌঁছাবে। ইতোমধ্যেই ইরানের দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তর পাকিস্তানে অবস্থিত মার্কিন স্বার্থ সংরক্ষণ অফিসের মাধ্যমে বিষয়টি সমন্বয় করছে। এটি মূলত একটি বিরল উদাহরণ, কারণ দীর্ঘদিন ধরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।

কর্তৃপক্ষের দাবি, এ উদ্যোগ কেবল প্রথম ধাপ। সমঝোতা অনুযায়ী মোট ৪০০ জন ইরানি নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে আমেরিকা আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে একই ধরনের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করেছে। এ বছর শুরুর দিকে পানামা ও কোস্টারিকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কয়েকশো আফ্রিকান ও এশীয় অভিবাসী গ্রহণে সম্মত হয়।

বর্তমান প্রশাসন বারবার ঘোষণা করেছে যে, অবৈধ অভিবাসনের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিশেষ করে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে এটি হবে আমেরিকার ইতিহাসের বৃহত্তম উদ্যোগ। তবে ইরানি নাগরিকদের ক্ষেত্রে কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড রয়েছে কি না— সে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ নীতির সমালোচনা করেছে। তাদের মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ অভিবাসীদের সেইসব দেশে ফেরত পাঠাতে পারে যেখানে তারা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন। অন্যদিকে ইরানের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা রয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি সতর্ক করেছেন যে, দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে। যদিও ইরান সরকার দাবি করে আসছে যে, মৃত্যুদণ্ড কেবলমাত্র ভয়াবহ অপরাধের ক্ষেত্রেই কার্যকর করা হয়, তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments