দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে কোরিয়ান শ্রমিকদের ওপর পরিচালিত অভিযানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। এ ঘটনায় তারা ওয়াশিংটনের কাছে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং আইন প্রয়োগের নামে যেন কোরিয়ান নাগরিকদের অধিকার ক্ষুণ্ণ না হয়, সেই দাবি জানিয়েছে।
গত শুক্রবার এক সপ্তাহ আটক থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি কারখানায় অভিযান শেষে ৩০০-রও বেশি কোরিয়ান শ্রমিক দেশে ফিরে আসেন। বিষয়টি দুই দেশের সম্পর্ককে চাপে ফেলেছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে আগ্রহী দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যেই বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সাথে মিলে সম্ভাব্য মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট লি জে-মিউং সতর্ক করে বলেছেন, এই ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে পারে। তিনি একে “অবাক করা পরিস্থিতি” হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং মনে করিয়ে দিয়েছেন, বিদেশে নতুন কারখানা স্থাপনে শ্রমিক পাঠানো কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর সাধারণ চর্চা।
প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর হুন্ডাই পরিচালিত একটি কারখানায় প্রায় ৪৭৫ জন—অধিকাংশই কোরিয়ান নাগরিক—আটক হন। এটি চলতি বছরে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সবচেয়ে বড় একক অভিযান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি, আটক শ্রমিকরা হয় ভিসার মেয়াদ অতিক্রম করেছিলেন অথবা কাজ করার অনুমতি পাননি।
শ্রমিকদের অনেকে অভিযানের সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, কেউ কেউ হাতকড়া পরা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়। হুন্ডাই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ কারণে তাদের কারখানার উদ্বোধন অন্তত দুই মাস পিছিয়ে যাবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমিক ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বিদেশি শ্রমিকদের দেশটিতে স্বাগত জানান এবং বিনিয়োগকারীদের ভয় পাইয়ে দিতে চান না। তার ভাষায়, জাহাজ নির্মাণ, চিপস তৈরি ও কম্পিউটিং খাতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ যুক্তরাষ্ট্রকে আরও শক্তিশালী করবে।