সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ক্ষেত্রে একটি নতুন যুগের সূচনা হলো। আবু ধাবির প্রযুক্তি ইনোভেশন ইনস্টিটিউট (Technology Innovation Institute – TII) এবং মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট Nvidia যৌথভাবে একটি নতুন গবেষণা ল্যাব চালু করেছে। এই ল্যাবটি মূলত আগামী প্রজন্মের AI মডেল এবং রোবোটিক্স প্ল্যাটফর্ম উন্নয়নের উপর কাজ করবে।
TII-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি মধ্যপ্রাচ্যে Nvidia-এর প্রথম AI টেকনোলজি সেন্টার, যা সংস্থার বহুমুখী গবেষণা কার্যক্রমকে Nvidia-এর শক্তিশালী AI মডেল ও কম্পিউটিং ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত করবে। এই উদ্যোগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈশ্বিক বিস্তারকে আরও ত্বরান্বিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ইনস্টিটিউটটি বিশেষ ধরনের এজ GPU চিপ ব্যবহার করতে পারবে, যা রোবোটিক্সসহ অন্যান্য ক্ষেত্রের গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। TII-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) নাজওয়া আরাজ জানিয়েছেন, “আমরা যে চিপটি ব্যবহার করতে যাচ্ছি, তার নাম থোর চিপ (Thor Chip)। এটি এমন একটি চিপ যা উন্নত রোবোটিক সিস্টেমের উন্নয়ন সম্ভব করে। আমরা এটি নতুনভাবে আমাদের গবেষণায় ব্যবহার করব।”
TII হলো Advanced Technology Research Council-এর একটি প্রয়োগমূলক গবেষণা শাখা। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের অংশ হিসেবে দেশের AI ক্ষেত্রে বৈশ্বিক নেতৃত্বের চেষ্টা করছে। তেল-সম্পদ সমৃদ্ধ এই গালফ রাষ্ট্র গত কয়েক বছরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর বিশাল বিনিয়োগ করছে, এবং প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ককে কাজে লাগাতে চাচ্ছে।
এই বছরের মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের গালফ সফরের সময়, সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি বহু-বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল যা আবু ধাবিতে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ডেটা সেন্টার হাব নির্মাণ করবে, যেখানে ব্যবহার হবে সর্বাধুনিক Nvidia চিপ। তবে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে এবং UAE-এর চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে এই চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
নাজওয়া আরাজ জানিয়েছেন, TII দীর্ঘদিন ধরে Nvidia-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং ইতিমধ্যেই নিজেদের ভাষা মডেলগুলো প্রশিক্ষণের জন্য Nvidia চিপ ব্যবহার করছে। যৌথ ল্যাবের পরিকল্পনা প্রায় এক বছর আগে থেকেই শুরু হয়েছে এবং এতে উভয় পক্ষের টিম কাজ করবে। এছাড়া, এই প্রকল্পের জন্য আরও নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে।
এই নতুন উদ্যোগ কেবল সংযুক্ত আরব আমিরাতকে AI ও রোবোটিক্স গবেষণায় এগিয়ে রাখবে না, বরং বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রেও নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে।