যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক প্রার্থী। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি কাউন্সিল অ্যাট লার্জ পদে জয়ী হয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এক গর্বিত অধ্যায় যুক্ত করেছেন।
গত ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে তিনি ডেমোক্র্যাটিক দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে “টিম স্মল” প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে বিজয় অর্জন করে তিনি প্রমাণ করেছেন, নেতৃত্ব ও দক্ষতার মাধ্যমে প্রবাসীরাও স্থানীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তাঁর এই জয় শুধু ব্যক্তিগত নয়— এটি বাংলাদেশি কমিউনিটির মর্যাদা বৃদ্ধির একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই প্রার্থী বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার সন্তান। তাঁর পিতা ছিলেন কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, যিনি শিক্ষা ও সমাজসেবায় অবদান রেখে গেছেন। পারিবারিক শিক্ষার ঐতিহ্য ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই তিনি সবসময় কমিউনিটির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি, তিনি স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের সাথেও সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি আটলান্টিক সিটিতে নতুন নেতৃত্ব, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, নিরাপত্তা বৃদ্ধি, কর হ্রাস এবং অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর এসব বাস্তবসম্মত ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নকেন্দ্রিক অঙ্গীকার ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, তাঁর মতো নেতৃত্ব শহরের উন্নয়নে নতুন দিক উন্মোচন করবে।
নির্বাচনে বিজয় অর্জনের পর তিনি আটলান্টিক সিটির ভোটারদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই জয় শুধুমাত্র আমার নয়, এটি পুরো কমিউনিটির জয়। আমি চেষ্টা করব সবার আশা ও বিশ্বাসের প্রতিদান দিতে।”
বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তাঁর এই ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপন করছে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ জার্সি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টি, বেঙ্গল ক্লাবসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সংগঠন তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছে। তাঁরা মনে করেন, এই অর্জন প্রমাণ করেছে— পরিশ্রম, সততা ও অঙ্গীকার থাকলে প্রবাসেও বাংলাদেশিরা নেতৃত্বের আসনে জায়গা করে নিতে পারেন।
প্রবাসী কমিউনিটির সদস্যদের মতে, তাঁর বিজয় ভবিষ্যতে তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করবে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিকদের জন্য এটি এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
এই জয় শুধু একটি নির্বাচনের সাফল্য নয়— এটি বহুমাত্রিক পরিশ্রম, সামাজিক সম্পৃক্ততা এবং জনআস্থার প্রতিফলন। তাঁর নেতৃত্বে আটলান্টিক সিটি নতুন এক উন্নয়নযাত্রায় প্রবেশ করবে বলে আশা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।



