ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান অ্যাশেজ সিরিজের বক্সিং ডে টেস্টের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। ঘোষিত এই দলে নেই নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স এবং অভিজ্ঞ স্পিনার নাথান লায়ন। সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের অনুপস্থিতি দলটির জন্য বড় পরিবর্তন হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার স্পিন আক্রমণের মূল ভরসা লায়ন অ্যাডিলেড টেস্টে ফিল্ডিং করার সময় পায়ে চোট পান। প্রাথমিক পরীক্ষার পর জানা যায়, তাঁর অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। ফলে বাকি সিরিজে তাঁর খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, চোট কাটিয়ে সদ্যই অ্যাডিলেড টেস্টে ফিরেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ও প্রধান পেসার কামিন্স। তবে দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি এড়াতে তাঁকে নিয়ে আর ঝুঁকি নিতে চায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট।
অস্ট্রেলিয়া দলের কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড নিশ্চিত করেছেন, চলতি অ্যাশেজে বাকি দুই টেস্টে কামিন্স আর খেলবেন না। সিরিজ জয়ের লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় এখন খেলোয়াড়ের শারীরিক সুস্থতাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কোচের ভাষায়, লক্ষ্য অর্জনের পর কাউকে অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকিতে ফেলার কোনো প্রয়োজন নেই।
লায়নের জায়গায় দলে ডাকা হয়েছে অফ স্পিনার টড মারফিকে। জাতীয় দলের হয়ে তাঁর এটি নতুন সুযোগ নয়, তবে দীর্ঘ বিরতির পর আবার গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে তাঁকে দেখা যাবে। অন্যদিকে, প্রায় চার বছর পর টেস্ট দলে ফিরেছেন পেসার ঝাই রিচার্ডসন। চোটজর্জরিত ক্যারিয়ারের কারণে তিনি খুব বেশি টেস্ট খেলতে পারেননি, তবে সুস্থ হয়ে ফেরায় তাঁকে বিকল্প পেসার হিসেবে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কামিন্সের অনুপস্থিতিতে বক্সিং ডে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব দেবেন স্টিভ স্মিথ। অসুস্থতার কারণে তিনি অ্যাডিলেড টেস্টে খেলতে পারেননি, তবে এবার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে দলে ফিরেছেন। নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা থাকায় তাঁর ওপরই ভরসা রাখছে দল।
অ্যাডিলেড টেস্টে একাদশে না থাকলেও পেসার মাইকেল নেসার, অলরাউন্ডার বো ওয়েবস্টার এবং পেসার ব্রেন্ডন ডগেট দলে নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছেন। ওই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৮২ রানের জয় পায় এবং ৩-০ ব্যবধানে অ্যাশেজ সিরিজ নিজেদের করে নেয়। ফলে বাকি ম্যাচগুলো এখন মূলত আনুষ্ঠানিকতা হলেও দল গঠনে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রাখা হচ্ছে।
কোচ ম্যাকডোনাল্ড এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, কামিন্সের ফেরার বিষয়টি ঘিরে আগেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সামান্য সমস্যার আভাস পেলেই তাঁকে বিশ্রামে পাঠানো হতো। পুরো প্রক্রিয়াটি সুচারুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় মেডিকেল টিমের ভূমিকাও প্রশংসার দাবি রাখে। ফেরার ম্যাচে ছয় উইকেট নেওয়া এবং সিরিজ নিশ্চিত করা দলের জন্য বিশেষ তৃপ্তির বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
চোট কাটিয়ে ওঠার পর কামিন্সের বিকল্প হিসেবে রিচার্ডসনকে বিবেচনা করা হতে পারে। তৃতীয় টেস্টের আগে তিনি দলের সঙ্গে যোগ দেন এবং অনুশীলনে ভালো ছন্দেই ছিলেন। এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি টেস্ট খেললেও তাঁর গতি ও সুইং অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
অন্যদিকে, মারফি জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত সাতটি টেস্ট খেলেছেন। সর্বশেষ তিনি খেলেছিলেন এ বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে। স্পিন বিভাগে অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকলেও তাঁকে ঘিরে আশাবাদী টিম ম্যানেজমেন্ট।
চলতি অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্ট শুরু হবে ২৬ ডিসেম্বর মেলবোর্নে। সিরিজ আগেই নিশ্চিত হলেও বক্সিং ডে টেস্ট বরাবরের মতোই বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। নতুন নেতৃত্ব ও পরিবর্তিত দল নিয়ে মাঠে নামতে প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়া দল (চতুর্থ টেস্ট):
স্টিভ স্মিথ (অধিনায়ক), স্কট বোল্যান্ড, অ্যালেক্স ক্যারি, ব্রেন্ডন ডগেট, ক্যামেরন গ্রিন, ট্রাভিস হেড, জশ ইংলিস, উসমান খাজা, মারনাস লাবুশেন, টড মারফি, মাইকেল নেসার, ঝাই রিচার্ডসন, মিচেল স্টার্ক, জেক ওয়েদারাল্ড, বো ওয়েবস্টার।



