হলিউডের অস্কারজয়ী অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। সান সেবাস্তিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে নিজের নতুন সিনেমা প্রিমিয়ারে অংশ নেওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় অকপটে বলেছেন, “আমি আমার দেশকে ভালোবাসি, কিন্তু বর্তমানে এ সময়ে এসে আমার দেশটাকে আর চিনতে পারি না।”
জোলি আরও উল্লেখ করেন, তিনি সবসময় বিশ্বজনীন দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনকে দেখেন এবং যে কোনো স্থানে ব্যক্তির মতপ্রকাশ ও স্বাধীনতা সীমিত করা বিপজ্জনক। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র নিয়ে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে।
একটি বিতর্কিত ঘটনায়, যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মীকে প্রকাশ্যে হত্যার পর জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘জিমি কিমেল লাইভ!’ সম্প্রচার অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়। অনুষ্ঠানটি স্থগিতের সিদ্ধান্তে শিল্পী ও অভিনেতারা প্রকাশ্যভাবে বিরোধিতা করেছেন। হলিউড তারকা মার্ক রাফালো সতর্ক করে বলেন, “এখন সরকারের পদক্ষেপই মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে, যা দেশের জন্য বিপজ্জনক।” সামাজিক মাধ্যমে পেদ্রো প্যাসকেলও মতপ্রকাশ ও গণতন্ত্রের রক্ষায় কণ্ঠ উচ্চারণ করেছেন।
এবিসি চ্যানেল, যা ডিজনির মালিকানাধীন, অনুষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্তের ফলে ডিজনি+ সাবস্ক্রিপশন বাতিলের আহ্বানও করেছেন অভিনেত্রী তাতিয়ানা মাসলানি। পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালক ড্যামন লিন্ডেলফ ঘোষণা দিয়েছেন, যদি ‘জিমি কিমেল’ ফিরিয়ে আনা না হয়, তিনি ডিজনির সঙ্গে আর কাজ করবেন না।
অ্যাঞ্জেলিনা জোলির বক্তব্য দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তার মন্তব্য হলিউডসহ আন্তর্জাতিক মহলেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অভিনেত্রী এবং অন্যান্য শিল্পীরা বারবার জোর দিয়ে বলছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ব্যক্তির অধিকার রক্ষা করা প্রতিটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য অপরিহার্য।
এই ঘটনার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জনগণের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিল্পীদের এই প্রতিবাদ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে পুনর্বিবেচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হতে পারে। অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ও অন্যান্য অভিনেতাদের কর্মকাণ্ড দেখাচ্ছে, কেবল বিনোদনের জগতেই নয়, সমাজ ও রাজনীতিতেও শিল্পীদের প্রভাব এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।