যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সম্প্রতি মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। অভিযোগ আনা হয়েছে যে, রাজ্যের তথাকথিত “সাংকচুয়ারি নীতি” ফেডারেল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই পদক্ষেপটি দেশটির বর্তমান প্রশাসনের অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
বিচার বিভাগ জানিয়েছে, মিনেসোটা কিছু নীতি অনুসরণ করছে যা ফেডারেল আইনের পরিপন্থী। বিশেষ করে মিনিয়াপলিস, সেন্ট পল এবং হেনেপিন কাউন্টি অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এর ফলে বেশ কয়েকজন দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী, যাদের বিরুদ্ধে হামলা ও মানবপাচারের অভিযোগ রয়েছে, মুক্তি পেয়েছে। সাধারণত এদের দেশে ফেরত পাঠানোর কথা ছিল।
বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপ নাগরিকদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্যের এই নীতির কারণে অবৈধভাবে থাকা অভিবাসীরা আইনগত প্রক্রিয়া এড়িয়ে যাচ্ছে, যা জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
অন্যদিকে, মিনেসোটা’র অ্যাটর্নি জেনারেল এ মামলাকে ভিত্তিহীন রাজনৈতিক প্রতিশোধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি আদালতে এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। মিনিয়াপলিসের মেয়রও জানিয়েছেন, শহরটি অভিবাসীদের পাশে থাকবে এবং তাদের অধিকার রক্ষায় কোনো অবস্থাতেই পিছু হটবে না।
সেন্ট পলের মেয়র এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা আমাদের অভিবাসী ও শরণার্থী প্রতিবেশীদের পাশে আছি এবং থাকব। অসাংবিধানিক দাবি যতই আসুক না কেন, আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সরব না।” তিনি আরও যোগ করেন, চলতি বছর আদালতে দুইবার সফলভাবে জয় পাওয়া গেছে এবং এবারও তারা নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার ব্যাপারে আশাবাদী।
অভিযোগের বিষয়ে মিনেসোটা’র গভর্নরের কার্যালয় বা হেনেপিন কাউন্টি শেরিফের কার্যালয়ের কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এটি কোনো একক মামলা নয়। এর আগে গত গ্রীষ্মে বিচার বিভাগ নিউ ইয়র্ক এবং লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের বিরুদ্ধেও একই ধরনের নীতির কারণে মামলা দায়ের করেছিল। এমনকি বোস্টন শহরকেও সম্প্রতি একই কারণে আদালতের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
প্রশাসনের যুক্তি হলো, এসব “সাংকচুয়ারি আইন” ফেডারেল অভিবাসন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে এবং ব্যাপক বহিষ্কার কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছে। বিচার বিভাগের সিভিল ডিভিশনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, অভিবাসন আইন প্রয়োগ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের রক্ষা করা একটি সুস্পষ্ট আইনি লঙ্ঘন, যা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
এই মামলার মধ্য দিয়ে আবারও যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল সরকার এবং অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে অভিবাসন নীতি বাস্তবায়ন নিয়ে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হলো।