যুক্তরাজ্যের প্রাচীনতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মানোন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এখন বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর টুল ‘চ্যাটজিপিটি এডু’। এক বছরের সফল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেবা চালু করেছে কর্তৃপক্ষ।
অক্সফোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, গবেষণা ও শিক্ষকদের বিভিন্ন একাডেমিক কাজে সহায়তা করতে বিশেষ সংস্করণ চ্যাটজিপিটি এডু কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এটি এমন একটি সংস্করণ, যা কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য তৈরি এবং এখানে তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোর নিরাপত্তা নীতিমালা অনুসরণ করা হয়। ফলে ব্যবহারকারীরা নিশ্চিন্তে তাদের একাডেমিক কাজে এই প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারবেন।
যুক্তরাজ্যে প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অক্সফোর্ড এই উদ্যোগ নিল। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী ও কর্মী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সর্বশেষ সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন। শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা, প্রজেক্ট তৈরি, অ্যাসাইনমেন্ট কিংবা প্রশাসনিক কার্যক্রমেও এই প্ল্যাটফর্ম কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই পদক্ষেপটি মূলত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওপেনএআইয়ের মধ্যে করা পাঁচ বছরের অংশীদারত্বের অংশ। চলতি বছরের মার্চে এই অংশীদারত্বের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এরপর এক বছরের পরীক্ষামূলক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কলেজের প্রায় ৭৫০ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মী অংশ নেন। তারা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার পরই চূড়ান্তভাবে বৃহত্তর পরিসরে চ্যাটজিপিটি এডু চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অক্সফোর্ড কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে, শিক্ষার্থীরা এই নতুন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আরও সৃজনশীল ও বিশ্লেষণধর্মী কাজ করতে পারবে। প্রযুক্তিকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে শিক্ষা আরও সহজ ও আধুনিক হবে। কেবল শিক্ষার্থীরাই নয়, শিক্ষকরাও এর মাধ্যমে লেকচার প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে গবেষণার নানা ক্ষেত্রে সহায়তা পাবেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ ভবিষ্যতের শিক্ষাপদ্ধতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিরাপদ ও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এমন সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে যুগোপযোগী এবং ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।